টার্বোচার্জার এর নাম তো আমরা শুনেছি। আর কাজটিও জানা। উদ্দেশ্য একটাই ইঞ্জিনের ইফিশিয়েন্সি (Engine efficency) বাড়ানো। কিন্তু এই টার্বোচার্জার কিন্তু এক ধরনের সুপারচার্জার। তাই এই সুপারচার্জার (Super Charger) নিয়েই আজ আমরা কিছু জানার চেষ্টা করবো।
পেট্রোল হোক কিংবা ডিজেল, ইঞ্জিনের ধরন যাই হোক না কেন এর থেকে অতিরিক্ত শক্তি পাওয়ার জন্য যে সিস্টেমের মাধ্যমে ইঞ্জিন এর সিলিন্ডারে যে অতিরিক্ত চার্জ প্রবেশ করানো হয় সেটাই সুপার চার্জিং সিস্টেম।
কেন এই সুপারচার্জিং?
সুপার চার্জিং ব্যবহারের বেশ কিছু কারণ আছে। যেমন:
- ইঞ্জিনের পাওয়ার আউট পুট বাড়ানো।
- প্রতিটি হর্স পাওয়ার অনুযায়ী শক্তি উৎপাদনের জন্য ইঞ্জিন এর ওজন কমানো যায়। যা এয়ারক্রাফট এবং রেসিং কার এর ইঞ্জিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- ইঞ্জিন এর সাইজ বা আকৃতি ছোট করা সম্ভব।
- অনেক উঁচু রাস্তাতে বিশেষ করে পাহাড়ি জনপথে গাড়ি চালানোর জন্য সুপার চার্জিং এর ব্যবহার বেশ গুরুত্ব বহন করে।
স্পার্ক ইগনিশন (পেট্রোল ইঞ্জিন) এবং কম্প্রেসড ইগনিশন (ডিজেল ইঞ্জিন) ইঞ্জিনে এই সুপার চার্জিং এর ব্যবহার এর প্রয়োজনীয়তা টা জেনে নেয়া যাক।
১।স্পার্ক ইগনিশন (পেট্রোল ইঞ্জিন) ইঞ্জিন।
- অধিক পরিমাণে জ্বালানি ও বাতাসের মিশ্রণ এর পরিমাণ সিলিন্ডারে প্রবেশের জন্য।
- ইঞ্জিনের শক্তি বৃদ্ধি করতে।
- ইঞ্জিনের দক্ষতা বা ইফিশিয়েন্সী বাড়াতে।
- ইঞ্জিনের আকার ছোট করতে।
- সিলিন্ডারের কম্বাশন চেম্বারের ধোয়া ভালো ভাবে বের করে দিতে।
২। কম্প্রেসড ইগনিশন (ডিজেল ইঞ্জিন) ইঞ্জিন।
- ডিজেল ইঞ্জিনে যেহেতু বাতাস ইনটেক মেনিফোল্ড এ প্রবেশ করে। তাই সুপার চার্জিং এই বাতাস কে আরও বেশি পরিমাণে সিলিন্ডারে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে।
- প্রথম কাজ টি ভিন্ন করলেও বাকি উদ্দেশ্য গুলো একই থাকে। পেট্রোল ইঞ্জিন এবং ডিজেল ইঞ্জিন এর ক্ষেত্রে।
যেভাবে কাজ করে সুপার চার্জিং।
সুপারচার্জার মূলত এক ধরনের এয়ার ব্লোয়ার যা কোন শক্তির উৎস থেকে অনেক বেশি গতিতে চালিত হয়।সকল সুপার চার্জার এর উদ্দেশ্য একই। বায়ুমন্ডলের চাপ কে সেই চাপকে এর তুলনায় অতিরিক্ত চাপে ইঞ্জিনের সিলিন্ডারে প্রবেশ করানো। যার ফলে ইঞ্জিনে শক্তি উৎপাদন বেড়ে যায়।
এতে ব্যবহৃত কম্পোনেন্টগুলো হলো:
- এয়ার ক্লিনার ।
- কার্বুরেটর ।
- কমপ্রেসর ।
- শ্যাফট।
- পুলি ।
- ইনটেক মেনিফোল্ড।
ইলেকট্রিক মোটর দিয়ে সুপারচার্জার চালনা করা হয়। এর জন্য আলাদা বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন। এর সাথে কাপলিং থাকে ফলে মোটর ঘুরার সাথে সাথে ইনটেক মেনিফোল্ড এর পথে থাকা এয়ার ব্লোয়ার ঘুরতে থাকে। যার কারণে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের তুলনায় অনেক বেশি চাপে জ্বালানি ও বাতাসের মিশ্রণ বা চার্জ সিলিন্ডারে প্রবেশ করে।
ইঞ্জিন দ্বারাও সুপারচার্জার পরিচালনা করা যায়। এই সিস্টেমে ব্লোয়ার ইঞ্জিনের শক্তিতে চলে। ইঞ্জিন এর সাথে বেল্ট বা চেইন এর মাধ্যমে ব্লোয়ার শ্যাফট কে ঘুরানো হয়। যার ফলে ইঞ্জিনের গতিতে ব্লোয়ার ঘুরে।
এগজস্ট গ্যাস থেকে সেন্ট্রিফিউগাল কম্প্রেসার (Centrifugal Compressor) ব্যবহার করে সুপার চার্জার চালানো যায়। তবে এটাকে তখন টার্বো চার্জার বলা হয়। ঐ যে শুরুতেই বলেছিলাম এই টার্বোচার্জার এক ধরনের সুপারচার্জার।